চীনকে জব্দ করতে যে উস্কানি চলছে তাতে চীনতো জব্দ হচ্ছে না বরং ঔ উস্কানির আবেগে আপ্লুত হয়ে নিজেদের টাকায় কেনা সম্পত্তি নষ্ট করছে আমাদের দেশের জনগণ। আর ঐ জিনিসের দাম অনেক আগেই চীনের কাছে পৌঁছে গেছে। ফলে ক্ষতি টা কার হচ্ছে, চীনের না ভারতীয় জনগণের। যদি চীনকে সত্যিই জব্দ করতে চান তাহলে যাদের সামর্থ্য আছে আপনারা নতুন কোন কিছু কেনার সময় বেশী দাম দিয়ে ভারতীয় পন্য কিনুন, বিশেষ করে যারা এই এই সব পদক্ষেপ নিয়েছেন। আগে কেনা জিনিস নষ্ট করবেন না , করলে আপনার ক্ষতি- চীনের নয়। আর যারা গরিব মানুষ তাদের জন্যে কম দামি পন্য উৎপাদন যাতে আমাদের দেশে হয়- এই দাবি নিয়ে আন্দোলন গড়ে তুলুন। আসলে চীনকে ভালোবাসার কারনে আমরা ভারতবাসী চীনা পন্য ব্যবহার করি- বিষয়টি এরকম নয়, ওগুলো কিনি সস্তায় পাই বলে। জার্মান বা আমেরিকা এর থেকে কম দামে পণ্যগুলো বিক্রি করলে ওগুলো চলতো। চীন তখন পাত্তা পাবেনা। চীনের গুনগান করছি ভাববেন না। দেশটির বিশ্ব বাজারের প্রতি আগ্রাসন আমার কাছেও ঘৃনার বিষয়। তবে কথায় বলে শত্রুর কাছেও অনেক কিছু শেখা যায়। এরা শিল্প ও প্রযুক্তিতে এতটা উন্নত করেছে যে সস্তায় এশিয়ার গরিব দেশগুলোতে তাদের পন্য দিয়ে ছেয়ে ফেলেছে সস্তায় উৎপাদনের জন্য। আসলে আমাদের দেশে গরিব মানুষ যখন বাজারে যায় তখন তার দেখার সময় নেই কোনটি চীনের আর কোনটি ভারতীয়, সে দেখে কোনটি সস্তায় পাওয়া যায়। আসলে আপনিও দেখেননি। দেখলে বুঝতেন আপনি যে ফোনটা দিয়ে লেখাটি পড়ছেন, সেই ফোনের চার্জার, ব্যাটারি, হেডফোন, পার্টস ইত্যাদি বেশিরভাগই চীনের। মিলিয়ে নিন। আমাদের দেশে এইরকম জিনিস সস্তায় উৎপাদন হলে আমরা কি এগুলো চীন থেকে কিনতাম ? কিনতাম না। তাই আমরা চীনের যেসমস্ত জিনিস কিনি সেসব সস্তায় আমাদের দেশে উৎপন্ন হলে এমনিতেই এসব পন্য চীন থেকে আমদানি করা বন্ধ হয়ে যাবে। বরং প্রতিবেশী দেশেও রপ্তানি করা যাবে ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটবে। তাই আপনার টাকা আছে বলে ছাদ থেকে টিভি ফেলে ভেঙে ফেলতে পারেন তাতে চীনের কিছু এসে যায় না কারণ ওই টিভির দাম চীনে অনেক আগেই পৌঁছে গেছে। কিন্তু আপনার এই উস্কানির জন্য একজন গরিব মানুষ কষ্ট করে জমানো টাকায় কেনা টিভি বা অন্য কিছু ভাঙলে ক্ষতিটা তার হবে, আপনার নয়। আমাদের এই দেশের জনগণের ক্ষতি হবে, তথা এই দেশের ক্ষতি হবে। তাই সকলকে বলি আবেগে ভেসে এমন কিছু করবেন না যা নিজেদের ও দেশের ক্ষতি করে। প্রয়োজনে দেশীয় প্রযুক্তি ও শিল্প গড়ে তোলার জন্য সরকারের কাছে আবেদন রাখুন, আন্দোলন গড়ে তুলুন। এতেই চীনের উপর নির্ভরশীলতা কমবে। তবে আমার মনে হয় সরকারও আসলে এইসব চায় না, চায় এক অর্থহীন উন্মাদনা যা ভোট এলেই বেড়ে যায়, বেড়ে যায় দেশের প্রতি কৃত্রিম ভালোবাসা। কারন যারা দেশের মানুষকে ভালোবাসে না তারা কোনো মতেই দেশপ্রেমিক হতে পারে না। এরা এই সুযোগে বুঝে নেয় রাজনৈতিক ধান্দা।
No comments:
Post a Comment